ডায়েট মানে হল ব্যালান্সড চার্ট। মানে যার শরীরে যতটা সহনশীল হয়, তাকে ঠিক ততটাই খাবার দেওয়া। আর খাবার দিলেই হল না, তাতে পুষ্টি উপাদান কতটা আছে সেটাও যাচাই করা দরকার। যদিও ডায়েট সকলের ক্ষেত্রে সমান নয়। এক একজন মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করবে যে সে কেমন ডায়েট অনুসরণ করবে বা করা উচিত। কেউ ওজন বৃদ্ধির জন্য বা কেউ ওজন কমাতে আবার কেউ পেশি গঠনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ডায়েট অনুসরণ করে। কিন্তু ডায়েট নিয়ে মানুষের অনেক ভুল ধারণা রয়েছে।

গত বছরও মানুষ ভাবতো গ্রিন টি খেলে ওজন কমে। এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন বলেন, গ্রিন টি বা দুধ-চিনি ছাড়া চা-কফি খেলে কারও কারও দেহের বিপাক হার কিছুটা বাড়তে পারে। আসলে এতে ওজন খুব একটা কমে না। বরং এগুলো খেলে এক-দু ঘণ্টা পর্যন্ত আর তেমন ক্ষুধা লাগে না। তাই ক্যালরি গ্রহণের সুযোগও কমে। বলা যায় পরোক্ষভাবে ওজন কিছুটা কমে। তার মানে কিন্তু এই নয় যে এসব পানীয় খেলেই ওজন কমবে বা এসব পানীয় পান করা জরুরি।

অনেকের ধারণা রাতের খাবার বাদ দিলে ওজন কমে যায় কিন্তু আসলে তা কতটা যথার্থ তা জানতে হবে। ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্যালরি কম গ্রহণ করা। একেবারে বাদ না দিয়ে বরং রাতের প্রথম ভাগে সেরে নিতে পারেন রাতের খাবার। সব বয়সী মানুষের জন্যই তা স্বাস্থ্যকর।  সন্ধ্যায় ভারী নাশতা না খেয়ে  আগেভাগে রাতের খাবার খেলেও রাতের বাকি সময় পানি খাবেন অবশ্যই। রাতে ক্ষুধা পেলে ফল কিংবা সবজি খেতে পারেন।

অনেকে মনে করেন তেল একেবারে বাদ দেওয়াই ভালো। তেল একেবারে বাদ দেয়া ঠিক নয়। সয়াবিন তেল, সরিষার তেল বাদ দিয়ে  জলপাই তেল গ্রহণ করা যেতে পারে।

তেলে ভাজা খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো । সাধারণভাবে রান্নায় যতটা প্রয়োজন, ততটা তেল ব্যবহার করাই যথেষ্ট। মাছের তেল স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। যার থেকে আমরা ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি। তবে ইলিশের তেল ভালো নয়। খাবার থেকে চর্বিও বাদ দিয়ে দিতে হবে।

অনেকে মনে করেন, ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলেই মোটা হওয়ার আশংকা থাকে। এটাও একটা ভুল ধারণা। খারাপ ফ্যাট এড়িয়ে চলতে হবে তাহলেই মোটা হওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই মেলে। সাধারণত জাঙ্ক ফুডে এই খারাপ ফ্যাট থাকে।

অনেকে ধারণা করেন কলা খেলে মোটা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে। ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম।

সময়ের সাথে সাথে মানুষের ভুল ধারণা কমে আসছে, মানুষ আরোও বেশি সচেতন হচ্ছে। নতুন বছরেও মানুষের পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস ও সচেতনতার ধারা চলমান থাকবে আশা করি।